সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
সম্মানিত পাঠকগণ, আজ আপনাদেরকে সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
বেশ অজানা ভিন্ন ধরনের তথ্য জানাবো। এর সাথে আরও বিভিন্ন ধরনের বিষয় সম্পর্কে
আলোচনা করব যেমন টমেটো খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা, গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার
উপকারিতা, টমেটো খেলে কি গ্যাস হয় সহ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে এ
আর্টিকেলটিতে। আশা করছি আর্টিকেলটি সবাই মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
টমেটো সম্পর্কে আরো ভিন্ন ভিন্ন তথ্য নিয়ে আমরা এই আর্টিকেলটিতে উপস্থাপন করেছি।
আশা করছি যারা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বে তাদের জন্য খুবই উপকারে আসবে।
দয়া করে সবাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
পোষ্ট সূচিপএ : সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
.
ভূমিকা
টমেটো হল বারো মাসি সবজি বা ফল। তবে শীত মৌসুমে টমেটোর চাহিদা বাজারে ব্যাপকভাবে
বিস্তার করে। টমেটো বাংলাদেশ এমন কোন অঞ্চল নেই যে পাওয়া যায় না। সব অঞ্চলেই
টমেটো চাষ করা হয় এবং পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের মানুষেরা এর কদর জানে না।
সেজন্য আজ আমরা এই আর্টিকেলটিতে টমেটো এর বিভিন্ন পুষ্টিগুণি এবং সকালে খালি পেটে
টমেটো খাওয়ার উপকারিতা,টমেটো খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সহ আরো ভিন্ন ভিন্ন
বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব সেজন্য সবাই আর্টিকেলটি করে পড়ুন।
টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
টমেটো এমন একটা সবজি যা পুষ্টিতে বিদ্যমান। টমেটো কাঁচা এবং পাকা দুই ভাবে খাওয়া
যায়। এখন আমরা জানবো টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
তথ্য।
টমেটো খাওয়ার উপকারিতা : টমেটো শীতের সবজি হলেও বর্তমানে সারা বছর এই
সবজি পাওয়া যায় আমাদের দেশে। টমেটোতে আছে অধিক হারে এ,বি,সি,কে এবং পটাশিয়াম।
টমেটো তো অধিকারই ভিটামিন এ থাকার কারণে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে এবং
শরীরকে ঠিক রাখে। যেসব রোগীরা রক্তশূন্যতায় ভোগে সেসব রোগীরা প্রতিদিন নিয়ম করে
দুই থেকে একটি টমেটো খেলে রক্তের কণিকাগুলো বৃদ্ধি হয় এবং শরীরের রক্ত ঠিক থাকে।
আরো পড়ুন : টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
তাছাড়াও প্রতিদিন টমেটো খেলে শরীরের হাড় মজবুত ও শক্ত থাকে। আবার টমেটোতে
ভিটামিন সি থাকায় প্রতিদিন টমেটো খেলে দৃষ্টিশক্তি ঠিক থাকে। তাছাড়া টমেটো
ত্বকের জন্য অধিক কার্যকর। মুখে ব্রণ এবং অন্য যেকোনো কিছুর দাগ থাকলে টমেটো বেটে
নিয়ম করে মুখে লাগালে মুখে লাবণ্য এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
টমেটো খাওয়ার অপকারিতা : প্রত্যেকটা জিনিস এর ভালো এবং খারাপ দুটো ূদিকই
আছে। এখন আমরা টমেটো এর অপকারিতা সম্পর্কে জানব। টমেটো এমন একটি সবজি যা অধিক
হারে খেলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে
যে, অতিরিক্ত টমেটো খেলে অ্যালার্জি, কিডনিতে পাথর,হজমের সমস্যা, পেটে বাথ সহ আরো
মারাত্মক রোগ বাসা বাদে শরীরে। সেজন্য আমাদেরকে নিয়ম কর টমেটো খেতে হবে এবং
অধিকা হারে টমেটো খাওয়া যাবে না।
গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় সবকিছু খাওয়ার আগে আমাদেরকে জেনে বুঝে খেতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায়
সবকিছু অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক না। অতিরিক্ত সব কিছু খেলে মা এবং শিশু দুজনায়
ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। আসুন আজ আমরা গর্ববস্থায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা গুলো
জেনে নেই। টমেটো খুবই পুষ্টিকর একটি সবজি। টমেটো গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত
একটি পুষ্টিকর সবজি।
গর্ভাবস্থায় টমেটো খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং অলসতা দূর হয়। গর্ভবতী
মহিলাদের সাধারণত দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর থেকেই টমেটো খাওয়ানো যাবে। টমেটো অধিক
হারে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, আয়রন এবং ফাইবার থাকে। আর এগুলো ভিটামিন
ডি এবং সি এর উৎস। সেজন্য গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ম করে টমেটো খাওয়ালে বাচ্চা ও মা
দুজনে সুস্থ থাকবে।
আরো পড়ুন : টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
থাকা ফাইবার গর্ভবতী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি দেয় এবং গর্ভবতী
মহিলাদের ওজন খুব দ্রুত বেড়ে যায় এবং চলাফেরা করতে কষ্ট হয় প্রতিদিন টমেটো
খেলে ওজন কমে যায়। সেজন্য ডাক্তাররা বলেছেন,গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন নিয়ম মাফিক
টমেটো খেলে মা এবং শিশু দুজনায় পুষ্টিতে ভরপুর থাকবে।
সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
টমেটোকে আমরা বেশিরভাগ মানুষই সবজি হিসেবে খায়। টমেটো একটা ফল। আমরা প্রতিদিন
যদি খালি পেটে সকালে ঘুম থেকে উঠে টমেটো খাই তাহলে আমাদের শরীরের নানা ধরনের রোগ
প্রতিরোধ করা সম্ভব। সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
টমেটো তো অধিক পরিমাণে লাইকোপিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, বিটাক্যারোটিন নামক
বিশেষ ধরনের খনিজ পদার্থ থাকে।সেই জন্য আমাদের শরীরকে সুন্দর ও তরতাজা করে রাখে।
বিটাক্যারোটিন নামক এক ধরনের খনিজ পদার্থ থাকার জন্য টমেটোতে মানুষের চোখে যে কোন
সমস্যা দূর করা সম্ভব এবং চোখে জ্যোতি বাড়বে। তাই নিয়মিত সকালে খালি পেটে টমেটো
খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।লাইকোপিন নামক এক ধরনের পদার্থ থাকে টমেটোতে যা হার্টের
রোগীদের জন্য বেশ কার্যকর।আবার যাদের মেদ ভুড়ি আছে তারা যদি নিয়মিত সকালে খালি
পেটে মাঝারি সাইজের দুই থেকে একটি টমেটো খায় তাহলে তাদের মেদ ভুড়ি কমে যাবে।
টমেটো একটা ঠান্ডা ফল। আবার টমেটোতে ভিটামিন কে থাকার কারণে আমাদের শরীরে
কোলেস্ট্ররেলের মাত্রা ঠিক রাখে।আবার নিয়মিত টমেটো খেলে আমাদের শরীরে রক্ত বেশি
গারো অথবা বেশি পাতলা হতে দেয় না। রক্তের মাত্রা একদম ঠিক রাখে। আপনি যদি ইয়ং
থাকতে চান তাহলে নিয়মিত রোজ সকালের টমেটো খান এক থেকে দুইটি তাহলে আপনি ইয়ং
থাকতে পারবেন এবং শরীরের সৌন্দর্য ঠিক রাখতে পারবেন।
আপনারা যদি চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করেন তাহলে আর দুশ্চিন্তা নয় কারণ
ভিটামিন এ এর অভাবে চুল পড়ে যায় আর এই ভিটামিন এ টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে থাকে।
সেজন্য যদি আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে টমেটো খান তাহলে চুল পড়ার সমস্যা
সমাধান হয়ে যাবে। নিয়মিত টমেটো খেলে চুলের গোড়ায় কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখে
এবং চুল দেখতে সুন্দর হয়, ঘন হয় চুল, এবং নতুন চুল গজায়।
উপরের সমস্যা সমাধান করার জন্য টমেটো রান্না নয় ফল, সালাত,জুস হিসেবে খেতে হবে
তাহলে সমস্যার সমাধান হবে আশা করছি আমি। কারণ রান্না করার টমেটোতে পুষ্টি একটু কম
থাকে সেজন্য কাঁচা অথবা পাকা অবস্থায় টমেটো খেতে হবে বেশি বেশি তাহলে শরীর সুস্থ
থাকবে।
কাঁচা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
শীতের মৌসুম আসতে না আসতেই বাজারে সবজির ব্যাপক বিস্তার। কারন শীত মৌসুমে আমাদের
দেশের আবহাওয়া সাথে মিলিয়ে সবজির উৎপাদন অধিক হারে হয়। সেই জন্য শীত মৌসুমকে
সবজির রাজা বলা হয়। তাই সব সবজির মতো টমেটো ও শীতকালীন সবজি। টমেটো কাঁচা বা
পাঁকা দুই অবস্থাতে খাওয়া যায়। তবে কাঁচা অবস্থায় খেলে এর পুষ্টিগুন অধিক
পাওয়া যায়।
আবার কাচা টমেটো আমরা রান্না করে খেলে এর পুষ্টিকুণ ঠিকই থাকে এর স্বাদ কয়েক গুণ
বেড়ে যায়।আসুন আজ আমরা কাঁচা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা এবং পুষ্টি গুন গুলো
জানব।বাতের ব্যথা এবং হাড়ের ক্ষয় ভালো করতে কাঁচা টমেটো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।কারণ
প্রত্যেকটি কাঁচা টমেটো থাকে মাইক্রগ্রাম, ভিটামিন কে এবং ৪৫ মিলিগ্রাম ফসফেট।
ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে আর টমেটোতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে
সেজন্য প্রতিদিন টমেটো খাওয়া উচিত।
গবেষণায় দেখা গেছে কাঁচা টমেটো অধিক লাইকোপিন থাকে সেটা শরীরের ত্বক সৌন্দর্য
ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সারের মতো জোটিল রোগের সমস্যা সমাধান করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যারা ধূমপানে আসক্তি হয়ে গেছে এবং যারা নিয়মিত ধূমপান সেবন
করে নিয়মিত কাঁচা টমেটো খেলে ধূমপান ত্যাগ করতে পারবে। সুতরাং কাঁচা টমেটো
আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ কমায়।
টমেটো খেলে কি গ্যাস হয়
টমেটো আমরা সবাই বেশ মজা করে খাই। আপনি জানেন কি টমেটো সবার জন্য উপকারী না কারণ
কারো কারো জন্য অপকারী। সেজন্য জেনে বুঝে খেতে হবে সবকিছু। অবাক করা কথা হলো
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই টমেটোকে সবজি হিসেবে খায় টমেটো একটা ফল। যাদের
শরীরে গ্যাস এবং এসিডিটির মতো রোগ বাসা বেধে আছে সেই সব রোগীদের জন্য টমেটো খুবই
বিপদজনক।
আবার যাদের শরীরে অম্বলের মত কঠিন রোগ বাসা বেঁধে আছে তাদের টমেটো খাওয়া উচিত
নয়। এইসব রোগীরা যদি টমেটো খায় তাদের পেটের ব্যথা কয়েকগুন বেড়ে যাবে।সেজন্য
টমেটো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আরো কিছু কিছু রোগ আছে যেগুলো থাকলে টমেটো
খাওয়া যাবেনা যেমন যেসব রোগীরা স্কিনে এলার্জির সমস্যায় ভুগছেন তারা টমেটো
খাওয়া থেকে বিরত থাকেন।
কারন টমেটো খেলে অধিক হারে এনার্জি বাড়তে পারে সেজন্য সাবধান। যেসব রোগীদের
ডায়রিয়া হয়েছে সেসব রোগীরা ডায়রিয়া ভালো না হওয়া পর্যন্ত টমেটো খাবেন
না।কারণ টমেটোতে সালমনেলা ব্যাকটেরিয়া ব্যাকটেরিয়া আছে যেটা ডায়রিয়ার
সমস্যাকে অধিক হারে বাড়াতে পারে।
আমার যেই সব রোগীদের কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভুগছেন তাদের টমেটো খেতে দেওয়া
যাবে না কারণ টমেটোতে থাকা অক্সালেট যেটা পাথরকে দ্রুত বাড়িয়ে দিবে। এইজন্য
আমাদের সবাইকে সতর্কতার সাথে টমেটো খেতে হবে। টমেটো যেমন পুষ্টিতে ভরপুর তেমন
বিপদজনক সেই জন্য টমেটো সবার জন্য খাওয়া ঠিক না।
লেখক এর মন্তব্য
বলছি আর্টিকেলটি সবাই মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো
লাগে তাহলে আপনাদের পরিচিত বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করেন দয়া
করে। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনাদের আমাকে কিছু জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের
মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু
আলাইকুম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url