করলা বীজ বপনের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই

সম্মানিত পাঠকদের, আজ আপনাদের করলা বীজ বপনের নিয়ম সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। এর সাথে বিভিন্ন মৈাসুমে কিভাবে করলা চাষ করতে হয় যথা বর্ষাকালে করলা চাষ কিভাবে করতে হয় এই সম্পর্কে আজ আলোচনা করা হবে এই আর্টিকেলটিতে। আশা করছি আর্টিকেলটি সবাই মনোযোগ সহকারে পড়বেন।


এখানে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক সম্পর্কে আলোচনা করব করলা চাষের উপযুক্ত সময়, করলা বীজ বপনের নিয়ম সহ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

ভূমিকা

করলা একটি তিতা সবজি হলেও এই সবজি বেশ জনপ্রিয়। করলা একটি বারোমাসি সবজি। এই সবজি কেউ জমিতে চাষ করে আবার কেউ বাড়ির ছাদে টপে চাষ করে। করলা খেলে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রোধ করা যায়। সেজন্য আজ আমরা আপনাদের সঠিক ভাবে করলা বীজ বপনের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই বিস্তারিত ভাবে আপনাদেরকে জানাবো আশা করছি আর্টিকেলটি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

করলা চাষের উপযুক্ত সময়

বাংলাদেশের অধিক পুষ্টিকারে সবজি হলো করলা। গ্রামের মানুষ সাধারণত করলা চাষ করে থাকেন। করলা তিতা হলেও প্রায় সব মানুষের কাছে এটা একটা জনপ্রিয় সবজি হিসেবে পরিচিত। তবে অনেকেরই করলার বীজ বপন সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই চলুন আজ করলা চাষের সঠিক নিয়ম বা উপযুক্ত সময়ের সম্পর্কে জেনে নেই।

করলা একটি বারোমাসি সবজি। তবে করলা চাষের সঠিক সময় হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু করে মে মাসের মধ্যে বীজ বপন করা। আবার অনেকে আগাম সবজি উৎপাদন করার জন্য জানুয়ারি মাসেও বীজ বপন করে থাকে। জানুয়ারি মাসের তাপমাত্রা কম থাকার কারণে গাছ খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে না। তাই আমাদের উচিত উপযুক্ত সময়ে করলা চাষ করা এবং অধিক ফলন পেয়ে অল্প সময় লাভবান হওয়া।

করলা বীজ বপনের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই

করলার বীজ বপন করার আগে প্রথমেই আমাদেরকে জমি নির্বাচন করতে হবে। করলার বীজ বপন করার জন্য দোয়াস, বেলে দোষ মাটি উপযোগী। করলা বীজ বপন করার জন্য প্রথমেই জমিতে তিন থেকে চারটা চাষ দিতে হবে এরপর দুইটা মই দিতে হবে। এভাবে তুমি প্রস্তুত করার পর মাটিগুলো ঝুরঝুর হয়েছে কিনা সেদিকে খেয়াল রেখে মাদায় তৈরি করতে হবে।


 প্রত্যেকটি মাদায় আপনারা পাঁচ কেজি গোবর সার,টি এস পি ৫০ গ্রাম, এবং এমওপি সার ৫০ গ্রাম দিতে হবে। এগুলো সব দেওয়ার পর এক সপ্তাহ এভাবে মাটি রেখে দিতে হবে৷ তারপর প্রত্যেকটি মাদায় বীজ বপন করে দিতে হবে। এভাবে সাধারণত প্রত্যেক এলাকায় করলার চাষ করার বীজ বপন করে থাকে। আর গ্রীষ্মকালেই করলার বীজ বপন করা হয়। এজন্য আমাদের সবার প্রথেমে করলা বীজ বপনের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই এ করলা চাষ করা।

 করলা চাষ পদ্ধতি

করলা তিতা হলেও করলা মানুষের কাছে জনপ্রিয় সবজি। চাষ করার জন্য বাংলাদেশে আবহাওয়া খুবই কার্যকর। করলা মানুষের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে। প্রত্যেকটি মানুষের করলা খাওয়া উচিত। আসুন আমরা করলা পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিই

মাটির গুন :সব মাটিতে করলা চাষ করা সম্ভব তবে দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটিতে চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়।

মৌসুম :গ্রীষ্মকালে উপযুক্ত সময় করলা চাষের।ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বপন করে চাষীরা একদম মে মাস পর্যন্ত লাগিয়ে যায় বীজ।আবার কিছু কিছু চাষীরা শীতকালেও করলা চাষ করে।

মাটি প্রস্তুত করলা চাষে :করলা চাষ করার জন্য মাটি যেভাবে প্রস্তুত করতে হবে জমি ভালোভাবে চাষ করে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং ৪০ কেজি গবর সার দিতে হবে প্রতি শতাংশ জমিতে । প্রতিটি বীজের দূরত্ব হবে ২ মিটার পর পর। এভাবে করলার বীজ লাগানো হয়।

সেচ দেওয়া :বীজ বোনার পর জমি শুকিয়ে গেলে সেচ দিতে হবে। আর প্রতিবার শেষ দেওয়ার আগে সার দিতে হবে। আর জমিতে যেন বেশি পানি না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

করলা তোলার সময় :সাধারণত ৪০-৫০ দিন পর থেকে করোনা তোলা হয় অল্প অল্প করে। ৬০দিন পর ঠিক মাপে করোলা তোলা হয়। এরপর এভাবেই তিন চার মাস পর্যন্ত করলা তলা হয়।

টবে করলা চাষ পদ্ধতি

টবে করোলা চাষ করার জন্য প্রথমে উন্নত মানের বীজ সংগ্রহ করতে হবে। প্রথমের টপে ৫০ শতাংশ জৈব সার এবং ৫০ শতাংশ বেলে-দোআশ মাটি সংগ্রহ করতে হবে এবং বীজ পুঁতে দিতে হবে ঐ টবে তারপর তিন চার দিন পর করলার গাছ বের হয়ে যাবে। করলা চাষ করার জন্য ১০ ইঞ্চি টপ ব্যবহার করতে হবে। করলা গাছে ফুল আসার পরে জৈব সার এবং রাসায়নিক সার ও ব্যবহার করা যায়। পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিম কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। এভাবেই টপে করা চাষ করা হয়।

বর্ষাকালে করলা চাষ

বর্ষাকালে করলা চাষ করার জন্য প্রথমেই আমাদেরকে উঁচু জায়গা নির্বাচন করতে হবে। উঁচু জায়গা না থাকলে বাড়ির ছাদে বর্ষাকালে করোলা চাষ করা যায় বস্তায় অথবা টপে। আসুন আমরা বর্ষাকালে করলা চাষ করার পদ্ধতি গুলো জেনে নিই

বর্ষাকালে করোলা চাষ করার জন্য প্রথমেই বীজগুলো একটি পাত্রে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে তারপর পানি থেকে বীজগুলো আলাদা করতে হবে। আলাদা করার পর আবার সুতি কাপড়ের মধ্যে ২৪ ঘন্টা রাখতে হবে দিয়ে বীজের মধ্যে একটি শিকড়ের মত দেখা দিবে।এরপর মাটি প্রস্তুত করতে হবে প্রত্যেকটি মাদায় গভীরতা হবে ১.৫ ইঞ্চি থেকে 2 ইঞ্চি।

প্রত্যেকটি মাদায় মাটি প্রস্তুত করার জন্য ৫ কেজি গোবর সার টি এস পি ২০০ গ্রাম এবং এমওপি সার ৫০ গ্রাম দিতে হবে।এরপর ভালোভাবে মাটিগুলো মিশিয়ে নিতে হবে সারের সাথে।সার গুলো মেশানোর এক সপ্তাহ পর আপনারা বীজগুলো বপন করে দিতে পারবেন। মাদায় মাটি গুলো ভালো বলবে ঝুরঝুরা করে নিতে হবে।


প্রত্যেকটি মাদায় দূরত্ব হবে থেকে ২ ইঞ্চি এবং দুই থেকে তিনটি বীজ বপন করতে হবে।বীজ বপন করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে অংশে শিকড় বের হয়েছে এ অংশ নিচের দিকে রেখে পুতে দিতে হবে।দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে যদি গাছ না বের হয় তাহলে ছিটিয়ে দিতে হবে তিন দিনের মধ্যে যদি কাজ না বের হয় তাহলে হালকা করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।

আশা করছি চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে গাছ বের হয়ে যাবে। বর্ষাকালে করোলা গাছের গোড়া চেপে যায় সেজন্য পাঁচ থেকে সাত দিন পর পর মাটিগুলো আলগা করে দিবেন খেয়াল রাখবেন যেন গাছের গুড়া নড়ে না যায়।বর্ষাকালে হাইব্রিড জাতের হবে করলা চাষ করা হয়। করলা গাছের পাতা কুরিয়ে যায সেজন্য প্রতি লিটার পানিতে টিটো অথবা এডমিয়ার বীষ গাছে স্প্রে করে দিতে হবে সাত থেকে দশ দিন পর পর দিতে হবে। সাধারণত এভাবে বর্ষাকালে করলা চাষ করা হয়।

লেখক এর মন্তব্য

আশা করছি মনোযোগ সহকারে আপনারা সবাই আর্টিকেলটি পড়ছেন। আর্টিকেলটি পড়ার পর যদি আপনাদের কিছু জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আপনারা। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে দয়া করে বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করে দিবেন। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url